নামাজের মাঝখানে কল বেজে উঠলে কী করবেন?
নামাজ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। পরিপূর্ণ একাগ্রতা ও খুশু-খুযুর সঙ্গে তা আদায় করা কাম্য। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-“নিশ্চয়ই সফল মুমিন তারাই যারা নিজেদের নামাজে আন্তরিকভাবে বিনীত”-সূরা মুমিনুন:১
খুশুর অর্থ, অন্তরকে বিনয়ের সঙ্গে নামাজের অভিমুখী করা। আর খুযুর অর্থ,বাহ্যিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে নত করা। নামাজে উভয়টি কাম্য। তাই নামাজে পরিপূর্ণ একাগ্রতা আনার জন্য মসজিদে প্রবেশের আগেই হয় মোবাইল একেবারে বন্ধ করা, আর নাহয় অন্তত রিংটোন বন্ধ করে রাখা আবশ্যক।
কারণ মসজিদে রিং বেজে উঠলে শুধু নিজের নামাজেরই একাগ্রতা নষ্ট হয় না; বরং অন্যদের নামাজেও বিঘ্নতা সৃষ্টি হয়।
উল্লিখিত সতর্কতা অবলম্বন করা সত্ত্বেও ভুলে কখনো মোবাইল বন্ধ করা না হলে এবং নামাজ অবস্থায় রিং বেজে উঠলে সেক্ষেত্রে নামাজ থেকেই রিং বন্ধ করতে হবে।
নামাজ অবস্থায় রিং বন্ধ করার ক্ষেত্রে লক্ষণীয় হলো-
ক. এক হাতের সাহায্যে মোবাইল পকেটে রেখেই বন্ধ করবে। দুই হাত ব্যবহার করবেন না। পকেট থেকে মোবাইল বের করতে হলে সেক্ষেত্রেও এক হাতে বন্ধ করবেন। মোবাইল বের করে পকেটের কাছে রেখেই না দেখে দ্রুত বন্ধ করে পকেটে রেখে দিবেন।
খ. এক হাত দ্বারা বন্ধ করতে গিয়ে মোবাইল পকেট থেকে বের করে দেখে দেখে বন্ধ করবেন না। অবশ্য বন্ধ করার জন্য বাটন দেখার প্রয়োজন হলে সেক্ষেত্রে বাটন দেখে দ্রুত বন্ধ করা যাবে। এ কারণে নামাজ নষ্ট হবে না। তবে কার কল আসল তা ইচ্ছাকৃত দেখলে নামাজ মাকরুহ হবে। কেননা নামাজ অবস্থায় কোন লেখা দেখা এবং বোঝার চেষ্টা করা মাকরুহ। তাই এ থেকে বিরত থাকা জরুরি। (আলমুহীতুল বুরহানী ২/১৫৯;শরহুল মুনইয়া,পৃ.৪৪৭;আদ্দুররুল মুখতার ১/৬৩৪,৬২৪)
গ. মোবাইল বন্ধের জন্য একসঙ্গে দুই হাত ব্যবহার করা যাবে না। কারণ একসঙ্গে দুই হাত ব্যবহার করলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে। অবশ্য দুই হাত ব্যবহার করা ছাড়া বন্ধ করা সম্ভব না হলে সেক্ষেত্রেও বন্ধ করতে হবে। যেন অন্যদের নামাজে বিঘ্নতা সৃষ্টি না হয়। আর ওই নামাজ পুনরায় পড়তে হবে। ঘ. সেজদা অবস্থায় রিং বেজে উঠলে সেক্ষেত্রে সেজদা থেকে না ওঠে পূর্বোক্ত পন্থায় এক হাতে রিং বন্ধ করবে। এক্ষেত্রে রিং বা মোবাইল বন্ধ করার জন্য ইমামকে সেজদায় রেখে সেজদা থেকে উঠা যাবে না।
মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম
উস্তায ও নায়েবে মুফতি,ফতোয়া বিভাগ,জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগ,ঢাকা-১২১৭