এতিম, পাগল ও নির্বোধের মালামাল আত্মসাৎ করা হারাম।
ইসলামে এতিম, পাগল ও নির্বোধের মালামাল আত্মসাৎ এ ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা ও শাস্তির কথা ঘোষণা করা হয়েছে। মহান আল্লাহ এতিমের মালামাল সম্বন্ধে বলেন- পিতৃহীন বয়োপ্রাপ্ত না হওয়া পর্যন্ত সদুদ্দেশ্য ছাড়া তার সম্পত্তির নিকটবর্তী হয়ো না। (সূরা ইসরা ৩৪)। অন্যত্র বলা হয়েছে, আর তোমরা পিতৃহীনকে তাদের ধন-সম্পদ সমর্পণ কর এবং উৎকৃষ্টের সঙ্গে নিকৃষ্ট বদল কর না, এবং তোমাদের সম্পদের সঙ্গে তাদের সম্পদকে মিশ্রিত করে গ্রাস কর না, নিশ্চয়ই তা মহাপাপ। (সূরা নিসা ২)।
একই সূরার আরেকটি আয়াতে বলা হয়েছে, তোমরা পিতৃহীনদের প্রতি লক্ষ্য রাখবে, যে পর্যন্ত না তারা বিবাহযোগ্য হয়, এবং তাদের মধ্যে ভালোমন্দ বিচারের জ্ঞান দেখলে তাদের সম্পদ তাদের ফিরিয়ে দেবে। তারা বড় হয়ে যাবে বলে অন্যায়ভাবে তা তাড়াতাড়ি খেয়ে ফেল না। যে অভাবমুক্ত সে যেন যা অবৈধ তা থেকে নিবৃত্ত থাকে এবং যে অভাবী সে যেন সঙ্গত পরিমাণে ভোগ করে। অতঃপর তোমরা যখন তাদের সম্পদ সমর্পণ করবে তখন সাক্ষী রেখ। আর হিসাব গ্রহণে আল্লাহই যথেষ্ট। (সূরা নিসা ৬)। আর (পিতৃহীনদের সম্পর্কে) মানুষের ভয় করা উচিত, যদি তারা পেছনে অসহায় সন্তান ছেড়ে যেত (তাহলে) তারাও তাদের সম্বন্ধে উদ্বিগ্ন হতো। অতএব লোকের উচিত (এতিম-অনাথ সম্পর্কে) আল্লাহকে ভয় করা এবং ন্যায়সঙ্গত কথা বলা। নিশ্চয় যারা পিতৃহীনদের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করে, তারা তাদের উদরে অগ্নি ভক্ষণ করে। আর তারা জ্বলন্ত আগুনে প্রবেশ করবে। (সূরা নিসা ৯-১০)।
মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, সাতটি সর্বনাশা কর্ম থেকে দূরে থাক। সবাই বলল, হে আল্লাহর রসুল! তা কী কী? তিনি বললেন, আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা, জাদু করা, ন্যায়সঙ্গত অধিকার ছাড়া আল্লাহ যে প্রাণ হত্যা করা হারাম করেছেন তা হত্যা করা, সুদ খাওয়া, এতিমের মাল ভক্ষণ করা, (যুদ্ধক্ষেত্র হতে) যুদ্ধের দিন পলায়ন করা এবং সতী, উদাসীনা, মুমিনা নারীর চরিত্রে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হে আল্লাহ! আমি দুই দুর্বল : এতিম ও নারীর অধিকার নষ্ট হওয়ার ব্যাপারে পাপ হওয়ার কথা ঘোষণা করছি। অতএব সাবধান হোক সেই অভিভাবকরা যারা অনাথ-এতিমের প্রতিপালনের দায়িত্ব নিয়ে থাকেন, তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের দায়িত্ব নিয়ে তা পরিচালনা বা জমি-জায়গার দায়িত্ব নিয়ে চাষাবাদ করে থাকেন এবং তারাও সাবধান হোক যারা এতিমখানা খুলে এতিমের মাল হরফের করে থাকেন।