৭ কলেজের ভোগান্তি কমিয়ে আনছে ঢাবি
২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে কোনো প্রকার পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়া রাজধানীর সাত সরকারি কলেজকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
হঠাৎ করে একীভূত করায় এই সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের যেমন বিড়ম্বনায় পড়তে হয়, তেমনি দুই লাখের বেশি শিক্ষার্থীর কার্যক্রম চালাতে গিয়েও হিমশিম খেতে হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও। এই ইস্যুতে পক্ষে-বিপক্ষে রাজপথে আন্দোলন হয়েছে; এমনকি ঘটেছে হামলা-মামলার ঘটনাও।
তবে অধিভুক্তির প্রায় দুই বছরের কাছাকাছি সময়ে এসে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম একটি কাঠামোর মধ্যে আনতে সক্ষম হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে আমরা নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছি। নতুন করে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা কোনো ধরনের সেশনজটে পড়বে না। সবকিছুই সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাত কলেজের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আলাদা ওয়েবসাইট তৈরি করেছে। যেখানে শিক্ষার্থীদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নোটিশ আকারে প্রকাশ করা হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমেছে।
অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার ফলাফল এখনও অটোমেশনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি। কিন্তু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অটোমেশন থাকায় ঢাবিকে নতুন করে সার্ভার কিনে শিক্ষার্থীদের ফলাফল তৈরি করা হচ্ছে। ফলে ওয়েবসাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন ও রোল নম্বর দিয়ে তাদের বিভিন্ন কোর্সের ফলাফল দেখতে পারছেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র রায়হান আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, ওয়েবসাইটে নিয়মিত তথ্য দেওয়ার ফলে প্রযুক্তির যে সুবিধা সেটি আমরা পাচ্ছি। ঢাবি তার নিজের পরীক্ষা পদ্ধতি অটোমেশন না করলেও আমাদের জন্য করেছে, এটা একটা ভালো দিক।
ঢাবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকার সময়ে শিক্ষার্থীদের সেশনজট ছিলো মারাত্মক পর্যায়ে। সেটি কমানোর লক্ষ্যে ঢাবি কর্তৃপক্ষ এবার পরীক্ষার ১০মাস আগেই রুটিন দিয়ে দিয়েছে।
প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। পরীক্ষার প্রবেশপত্র ও মার্কশিট নিজ নিজ কলেজ থেকে সরবরাহ করা হয়। প্রায় ১৫-২০ হাজার প্রবেশনারি সার্টিফিকেট স্ব স্ব কলেজ ক্যাম্পাস থেকে গ্রহণ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
আগামীতে ফরম ফিল-আপ অনলাইনে সম্পন্ন করা ও সফটওয়ারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ট্যাবুলেশন করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে আমরা পরীক্ষার ১০মাস আগেই রুটিন দিয়েছি। তারা যেন ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে পারে।
পাশাপাশি নন-কলেজিয়েট, ডিসকলেজিয়েট চালু করার কারণে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে আগ্রহী হচ্ছেন বলে জানান তিনি।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালেয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসের সংশ্লিষ্টদের প্রচেষ্টায় সাত কলেজের সমস্যা কাটিয়ে ওঠেছি। পর্যায়ক্রমে আরও ভালো অবস্থায় আসবে বলে আশা করছি।